কোলেস্টরল আমাদের দেহের একটি অপরিহার্য উপাদান, যার বিভিন্ন প্রকার রয়েছে – প্রধানত নিম্ন ঘনত্বের লিপোপ্রোটিন (এলডিএল) এবং উচ্চ ঘনত্বের লিপোপ্রোটিন (এইচডিএল)। এলডিএল কোলেস্টরল সাধারণত “খারাপ” কোলেস্টরল হিসেবে পরিচিত, কারণ এটি আমাদের ধমনীতে জমা হয়ে ব্লকেজ সৃষ্টি করে। অন্যদিকে, এইচডিএল কোলেস্টরল “ভাল” কোলেস্টরল নামে পরিচিত, কারণ এটি এলডিএল কোলেস্টরলকে ধমনীগুলি থেকে বের করতে সহায়তা করে।
কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণে না রাখলে, হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং অন্যান্য গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। উচ্চ কোলেস্টরল ধমনীকে সংকুচিত করে, যার ফলে রক্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয় এবং হৃদযন্ত্রে চাপ বৃদ্ধি পায়। এটি হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতায় ব্যাঘাত ঘটিয়ে হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে।
শুধুমাত্র খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রা পরিবর্তন নয়, ব্যায়ামও কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ এবং যোগাসন চর্চা কোলেস্টরলের মাত্রা কমাতে সহায়ক হতে পারে। যোগাসন বিশেষত কার্যকর, কারণ এটি শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং শরীরের হরমোনিক ব্যালেন্স স্থির রাখতে সহায়তা করে।
অতএব, কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণে রাখা স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কিছু সহজ যোগাসন অন্তর্ভুক্ত করে আমরা কোলেস্টরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি এবং সুস্থ জীবনযাপন করতে পারি।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে যোগাসনের ভূমিকা
যোগাসন, বা যোগব্যায়াম, কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারে। বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং বিশেষজ্ঞদের মতামত থেকে জানা যায় যে নিয়মিত যোগাসন অভ্যাসে শরীরের অভ্যন্তরীণ সিস্টেমগুলির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, যা কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
যোগাসনের মাধ্যমে শরীরের মেটাবলিজম বৃদ্ধি পায়। বিভিন্ন আসনের মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের উপর চাপ সৃষ্টি হয়, যা রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে। রক্তের মাধ্যমে কোলেস্টরল বিভিন্ন অঙ্গে পৌঁছাতে সক্ষম হয় এবং শরীর থেকে নির্গত হয়।
দ্বিতীয়ত, যোগাসনের মাধ্যমে মানসিক চাপ কমে, যা 🔎︎ কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। মানসিক চাপের কারণে শরীরে কর্টিসল হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা কোলেস্টরল বৃদ্ধি করতে পারে। যোগাসনের মাধ্যমে মানসিক চাপ কমে, কর্টিসল হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে, এবং কোলেস্টরলও নিয়ন্ত্রণে আসে।
তৃতীয়ত, কিছু যোগাসন বিশেষভাবে কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। উদাহরণস্বরূপ, সেতু বন্ধাসন, সর্বাঙ্গাসন এবং ভুজঙ্গাসন প্রভৃতি আসনগুলি শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে, যা কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত যোগাসন অভ্যাসে শরীরের এনডোরফিন হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। এটি কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণের একটি প্রাকৃতিক উপায়।
অতএব, যোগাসন কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণে একটি কার্যকর এবং প্রাকৃতিক উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়। নিয়মিত যোগাসন অভ্যাসে নিয়ে আসতে পারে উচ্চ কোলেস্টরল সমস্যার সমাধান এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি।
সরলাসন
সরলাসন একটি সহজ এবং কার্যকর যোগাসন যা কোলেস্টরলের মাত্রা কমাতে সহায়ক হতে পারে। সরলাসন শব্দটি দুটি সংস্কৃত শব্দ “সরল” অর্থাৎ “সোজা” এবং “আসন” অর্থাৎ “বসা” থেকে এসেছে। এই আসনটি কেবল শারীরিকভাবে নয়, মানসিকভাবেও শান্তি এবং তন্দ্রা প্রদান করতে সক্ষম।
সরলাসন করতে প্রথমে মেঝেতে একটি মাদুর বিছিয়ে বসতে হবে। পা দুটো সোজা করে সামনের দিকে ছড়িয়ে দিন। এখন, পা দুটোকে ধীরে ধীরে ভাঁজ করে, ডান পা বাঁ পায়ের ওপর রাখুন। শরীরকে সোজা রাখুন এবং মেরুদণ্ডকে সোজা করে রাখার চেষ্টা করুন। হাত দুটোকে হাঁটুর ওপর রাখুন এবং চোখ বন্ধ করুন। এভাবে কয়েক মিনিট ধরে বসে থাকুন।
সরলাসন নিয়মিত অভ্যাস করলে রক্ত সঞ্চালন উন্নত হয়, যা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে অক্সিজেন এবং পুষ্টি সরবরাহ নিশ্চিত করে। এই প্রক্রিয়াটি রক্তে কোলেস্টরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। সরলাসনের ফলে মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কমে, যা কোলেস্টরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
এই আসনটি করতে খুব বেশি শারীরিক কসরত প্রয়োজন হয় না, তাই এটি সব বয়সের মানুষের জন্য উপযুক্ত। তবে, যাদের ঘাড় বা মেরুদণ্ডে কোনো সমস্যা রয়েছে, তাদের সরলাসন করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। নিয়মিত সরলাসন অভ্যাসে কোলেস্টরলের মাত্রা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে।
ভুজঙ্গাসন
ভুজঙ্গাসন, যা সাধারণত কোবরা পোজ নামে পরিচিত, যোগব্যায়ামের একটি গুরুত্বপূর্ণ আসন যা কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে। এটি মেরুদণ্ডকে সোজা করে এবং শরীরের পেশীগুলিকে প্রসারিত করে, যা রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং কোলেস্টরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। নিয়মিত ভুজঙ্গাসন অনুশীলন উচ্চ ঘনত্বের লিপোপ্রোটিন (HDL) বাড়াতে সাহায্য করতে পারে, যা শরীরের মন্দ কোলেস্টরল (LDL) কমাতে সহায়ক।
ভুজঙ্গাসনের সঠিক পদ্ধতিতে অভ্যাস করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমে, একটি ম্যাটের উপর মুখ নিচু করে শোয়ান। পা দুটোকে মাটি স্পর্শ করিয়ে রাখুন এবং হাত দুটো কাঁধের নিচে রাখুন। ধীরে ধীরে শরীরের উপরের অংশ উত্তোলন করুন এবং কনুই বাঁকিয়ে রাখুন। মাথা ও বুক উপরের দিকে তুলে ধরুন এবং দৃষ্টি সামনের দিকে রাখুন। এই অবস্থানে ১৫ থেকে ২০ সেকেন্ড ধরে রাখুন এবং ধীরে ধীরে আবার প্রাথমিক অবস্থায় ফিরে আসুন।
ভুজঙ্গাসন অভ্যাস করার সময় কিছু সতর্কতা মেনে চলা উচিত। যাদের পিঠে বা মেরুদণ্ডে কোনো সমস্যা আছে, তাদের এই আসন করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এছাড়া, গর্ভবতী মহিলাদের এই আসন না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। ভুজঙ্গাসন করার সময় শ্বাস-নিশ্বাসের নিয়মিততা বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যাতে শরীরের কোন অঙ্গতে চাপ সৃষ্টি না হয়।
ভুজঙ্গাসনের নিয়মিত অভ্যাস শুধুমাত্র কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণে নয়, বরং শরীরের অন্যান্য অংশের স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত কার্যকর। এটি মেরুদণ্ডের স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি করে, পেটের পেশীগুলিকে শক্তিশালী করে এবং মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক। তাই, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য ভুজঙ্গাসন একটি অপরিহার্য যোগব্যায়াম হতে পারে।
পশ্চিমোত্তানাসন
পশ্চিমোত্তানাসন, যা সাধারণত ‘ইনটেনস ওয়েস্টার্ন স্ট্রেচ’ নামে পরিচিত, কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই আসনটি করার মাধ্যমে শরীরের পিছন দিকের সমস্ত পেশী ও স্নায়ু প্রসারিত হয়, যা রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি করে এবং কোলেস্টরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত এই আসন অভ্যাসে নিলে হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়, যকৃত ও কিডনির কার্যকারিতা উন্নত হয়, এবং শরীরে সঞ্চিত বিষাক্ত পদার্থ দূরীকরণে সহায়ক হয়।
পশ্চিমোত্তানাসন করতে হলে প্রথমে একটি মাদুরের উপর বসুন এবং পা দুটি সামনে সোজা করে রাখুন। শ্বাস নিন এবং হাত দুটি উপরে তুলুন। শ্বাস ছাড়ুন এবং কোমর থেকে সামনের দিকে ঝুঁকে যান। হাত দিয়ে পায়ের আঙ্গুল ধরার চেষ্টা করুন। মাথা হাঁটুর দিকে নিয়ে যান এবং যেখানেই সম্ভব, সেখানেই থামুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে কিছুক্ষণ এই অবস্থানে থাকুন।
এই আসন করার সময় কিছু সতর্কতা মেনে চলা উচিত। যদি কোমরে বা পিঠে কোনো আঘাত থাকে, তবে এই আসন করার সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য এই আসন কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাই, প্রয়োজন হলে একজন যোগ প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিন। এছাড়া, গর্ভবতী মহিলাদেরও এই আসন করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
পশ্চিমোত্তানাসন নিয়মিত অভ্যাস করলে শরীরের নমনীয়তা বৃদ্ধি পায়, মানসিক চাপ কমে, এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। এর ফলে কোলেস্টরলের মাত্রা স্বাভাবিক থাকে। এই আসনটি শুধুমাত্র শারীরিক নয়, মানসিক স্বাস্থ্যেও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। তাই, পশ্চিমোত্তানাসনকে দৈনন্দিন যোগাভ্যাসের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করুন এবং সুস্থ থাকুন।
শলভাসন
শলভাসন একটি গুরুত্বপূর্ণ যোগাসন যা কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এই আসনটি পেট ও কোমরের পেশিগুলিকে শক্তিশালী করে এবং অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলির কার্যক্ষমতা বাড়ায়। শলভাসন করার জন্য প্রথমে মাটিতে পেটের উপর উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। তারপর ধীরে ধীরে আপনার পা এবং মাথা উভয়কেই উপরে তুলুন, যেন আপনার শরীরটি একটি নৌকাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। এই অবস্থানে থাকাকালীন আপনার শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং পেটের পেশিতে চাপ দিন। কয়েক সেকেন্ড ধরে এই অবস্থানে থাকার পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসুন।
শলভাসনের মাধ্যমে কোলেস্টরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব, কারণ এটি লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে। নিয়মিত শলভাসন অভ্যাস করলে শরীরের চর্বি কমে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। এর ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস পায় এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
শলভাসন শুধুমাত্র কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণেই নয়, এটি অন্যান্য স্বাস্থ্য উপকারিতাও প্রদান করে। বিশেষ করে, এই আসনটি পিঠের ব্যথা লাঘব করে, হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং মেরুদণ্ডকে স্থিতিস্থাপক রাখে। এছাড়া, শলভাসন মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং মনকে শান্ত রাখে।
এত সমৃদ্ধ উপকারিতার জন্য শলভাসনকে প্রতিদিনের যোগব্যায়ামের অংশ করা উচিত। তবে, যে কোন যোগাসন শুরু করার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন, যাতে সঠিকভাবে এবং সুরক্ষিতভাবে এই আসনগুলি অভ্যাস করা যায়।
অধোমুখ শবাসন
অধোমুখ শবাসন , যাকে Downward-Facing Dog Pose নামে পরিচিত, হল একটি বিখ্যাত যোগ আসন যা কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে। এই আসনটি মূলত শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। অধোমুখ শবাসন সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়, যা কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
এই আসনটি করার জন্য প্রথমে মাটিতে চার হাত-পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াতে হবে। হাতগুলি কাঁধের নিচে এবং পায়গুলি কোমরের নিচে রাখতে হবে। এরপর ধীরে ধীরে নিতম্ব উপরের দিকে উঁচু করতে হবে, যাতে শরীরটি একটি উল্টানো “V” আকৃতির মত দেখায়। মাথা ও ঘাড় শিথিল রাখতে হবে এবং কাঁধগুলি পেছনের দিকে টেনে রাখতে হবে। এই অবস্থানে ৩০ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট পর্যন্ত থাকতে হবে।
অধোমুখ শবাসনের মাধ্যমে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে অক্সিজেন এবং পুষ্টির সরবরাহ বৃদ্ধি পায়। এই আসনটি স্ট্রেস কমায় এবং হৃৎপিণ্ডের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক হিসেবে কাজ করে। নিয়মিত এই আসনটি অভ্যাসে আনলে শরীরের কোলেস্টরল মাত্রা কমতে পারে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে।
অধোমুখ শবাসনের আরও একটি উল্লেখযোগ্য উপকারিতা হল এটি শরীরের পেশি শক্তিশালী করে এবং নমনীয়তা বাড়ায়। পায়ের পেশি, হ্যামস্ট্রিং এবং কাঁধের পেশি শক্তিশালী হয়, যা শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করে। এছাড়া, এই আসনটি মনোযোগ বৃদ্ধিতেও সহায়ক, যার ফলে মানসিক চাপ কমে এবং মানসিক শান্তি বৃদ্ধি পায়।
উপরোক্ত যোগাসনগুলি কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকরী প্রমাণিত হয়েছে। প্রতিটি আসনের নিজস্ব বিশেষত্ব রয়েছে যা শরীরের বিভিন্ন অংশে কাজ করে, রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং স্থূলতা কমায়। উদাহরণস্বরূপ, সেতুবন্ধাসন পিঠ ও কোমরের পেশী শক্তিশালী করে, ভুজঙ্গাসন পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করে, এবং ত্রিকোণাসন শরীরের ভারসাম্য উন্নত করে। এই আসনগুলি নিয়মিত অনুশীলন করলে কোলেস্টরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
তবে শুধু যোগাসন করলেই হবে না, এর সাথে জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন আনাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুষম আহার, পর্যাপ্ত বিশ্রাম, এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণও কোলেস্টরল কমাতে সহায়তা করে। এছাড়া নিয়মিত যোগাসন চর্চা করলে মনও শান্ত থাকে, যা মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে। কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে ধূমপান ও অতিরিক্ত মদ্যপান থেকেও বিরত থাকা উচিত।
সর্বোপরি, স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার জন্য যোগাসন একটি অত্যন্ত কার্যকরী পদ্ধতি। নিয়মিত যোগাসনের মাধ্যমে কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব এবং সার্বিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করা যায়। তাই, প্রতিদিন অল্প সময় ব্যয় করে এই আসনগুলি চর্চা করা উচিত, যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য দীর্ঘমেয়াদে উপকারী হবে।